করোনা মহামারিতে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি মাসের ১৯ দিনে ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় ৮৮ এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বলেন, ‘এবারের করোনার ধরনটাই ভিন্ন। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের অবস্থা দ্রুত অবনতি হচ্ছে। আমরা প্রত্যেক রোগীকে সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি জানান, গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণহানি হয়েছে ১৯৭ জনের। এরা ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদ, মাগুরা জেলা থেকে চিকিৎসা নিতে মেডিকেলে এসেছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ১৯ কোটি ছাড়াল
হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, ১৯ দিনের মধ্যে সব থেকে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৭ জুলাই। এই দিনে মারা গেছে ২১ জন।
বর্তমানে ৫১৬ শয্যার এই মেডিকেল কলেজে সম্পূর্ণভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সোমবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৩৪৫ জন ভর্তি রোগী ছিলেন হাসপাতালটিতে। এর মধ্যে আইসিইউ-তে রয়েছেন ১৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৯ জন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর দেহে ডেল্টা ধরন
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ’র) ফরিদপুর শাখার সভাপতি ডা. আ.স.ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো বলেন, এই ভেরিয়েন্টটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা খুব অল্প সময়েই অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে। এই জন্য মৃত্যু বাড়ছে।
তিনি বলেন, কোনও ব্যক্তি শরীরে সামান্য জ্বর, ঠান্ডা বা অন্য কোনও সমস্যা হলেই দ্রুত চিকিৎসকরে পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকলকেই চলতে হবে।
ফরিদপুর জেলার করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৪৭০ টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ২১৯ জন। শনাক্তের হার ৪৬.৫৯ ভাগ।
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৬ হাজার ২শ’ ব্যক্তি, সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৬৭৭ জন। জেলায় মোট মৃত্যু ৩১৫।
আরও পড়ুন: বরিশালে একদিনে ৮৯১ শনাক্ত, মৃত্যু ১২
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, করোনার এই দূর্যোগে সকলকেই স্বাস্থ্য বিধির মধ্যে আসতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, করোনা যুদ্ধে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা দরকার।
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি জেলার হাট-বাজার, বিপনী বিতানসহ জনবহুল স্থানে মানুষকে সচেতন করতে এবং স্বাস্থ্য বিধির মধ্যে আনতে।’